বাংলাদেশ-আজারবাইজান সম্পর্ক আরো গভীর করার প্রতিশ্রুতি
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৪; আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৫:৪৫
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বৃহস্পতিবার কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। বৈঠকে তিনি উল্লেখ করেন যে, আজারবাইজান বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহী।
প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাব্য খাতগুলো চিহ্নিত করতে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সফর করবে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে একটি আবাসিক দূতাবাস খোলার সম্ভাবনা নিয়ে আজারবাইজান সরকার ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে আরো সুদৃঢ় ও স্থায়ী সম্পর্ক গড়তে সহায়ক হবে।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও যুবশক্তির প্রভাবকে প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ বলেন, "জুলাই-আগস্টের ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিপ্লব পর্যবেক্ষণ করে আমি খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং এই চেতনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আজারবাইজানেও একটি যুব স্বনির্ভর কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।"
প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা তুলে ধরে বলেন, তেল ও প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে আরো বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশি জাহাজ-নির্মাণ শিল্পের উন্নতির জন্য আজারবাইজান বিশেষ সুযোগ দেখতে পাচ্ছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।
দুর্নীতি রোধে আজারবাইজানের ডিজিটালাইজেশন প্রচেষ্টা প্রসঙ্গে আলিয়েভ বলেন, তার দেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সরকারি সেবা উন্নয়নের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করেছে এবং তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে এই অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস প্রেসিডেন্ট আলিয়েভকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ আজারবাইজানের সাথে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যুতে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে চায়।” তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক জনগণের সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয় দেশই লাভবান হবে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, এবং তুরস্ক ও আজারবাইজানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আজারবাইজান দুই দেশই এক নতুন দিগন্তে নিজেদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে আরও শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তি গড়বে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: