বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ চলমান
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৯; আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৫:১১
বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল প্রকল্পে নির্মাণ কাজ জোরকদমে এগিয়ে চলছে।
ঢাকা শহরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০২৮ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যে ইউটিলিটি পরিষেবা স্থানান্তর এবং অন্যান্য প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষের পথে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এই প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছে, যা শহরের দীর্ঘস্থায়ী যানজট নিরসন এবং পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন সেবা উন্নত করবে বলে আশাবাদী।
ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রউফ জানান, এই মেট্রোরেল প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন লাখো যাত্রী দ্রুত এবং সুবিধাজনক যাত্রার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। এমআরটি লাইন-১ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত—একটি ভূগর্ভস্থ বিমানবন্দর রুট এবং অন্যটি পূর্বাচল রুট। ৩১.২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রো লাইনের মধ্যে বিমানবন্দর রুট ১৯.৮৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং পুরোটা ভূগর্ভস্থ, যেখানে ১২টি স্টেশন থাকবে। পূর্বাচল রুটে রয়েছে ১১.৩৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড লাইন, যাতে একটি ভূগর্ভস্থ স্টেশনসহ মোট ৯টি স্টেশন তৈরি করা হবে। পূর্বাচল রুটের ৯টি স্টেশনের মধ্যে নাতুন বাজার এবং নোদ্দা স্টেশন ভূগর্ভে নির্মিত হবে, বাকিগুলো এলিভেটেড।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার ৫৩ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যার মধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা সহায়তা দিচ্ছে এবং বাকিটা বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং প্রকল্পের খুঁটিনাটি পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়। এই প্রকল্পটি মোট ১২টি প্যাকেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে, যার মাধ্যমে কাজের প্রতিটি ধাপে বিশেষায়িত ঠিকাদারদের মাধ্যমে নির্মাণ প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, এমআরটি লাইন-১ সম্পন্ন হলে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৭০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে, যা ঢাকা শহরের যাত্রীদের জন্য একটি বিশাল সুবিধা হিসেবে কাজ করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মেট্রো লাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ১৩.৬৬ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করতে পারবে, যা বর্তমান এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের তুলনায় প্রায় ২.৮৩ গুণ বেশি।
ঢাকার যানজট নিরসন এবং নগর পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বদ্ধপরিকর। পরিকল্পনায় রয়েছে মোট ৬টি এমআরটি লাইন, যার মাধ্যমে শহরের ১২৯ কিলোমিটার জুড়ে মেট্রোরেলের অবকাঠামো বিস্তৃত হবে, যার মধ্যে ৬৮ কিলোমিটার এলিভেটেড এবং ৬১ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ থাকবে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে শহরের ৫০ লাখ মানুষ নিয়মিতভাবে উন্নত গণপরিবহন সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: