অর্থ পাচার প্রতিরোধে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা কামনা প্রধান উপদেষ্টার
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬; আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:০০
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার, সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো’র সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের প্রতি এই আহ্বান জানান। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। এই অর্থ দেশের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো ফেরত আনার জন্য সিঙ্গাপুরের পূর্ণ সহযোগিতা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।” জবাবে হাইকমিশনার লো সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন এবং অবৈধ অর্থের লেনদেন বন্ধ করতে সিঙ্গাপুরও আগ্রহী বলে জানান।
অভিবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষায় এবং নিয়োগ ব্যয় কমানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস সিঙ্গাপুরের প্রতি আরও সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা চাই আমাদের অভিবাসী শ্রমিকরা কম খরচে বিদেশে কাজ করতে যেতে পারুক এবং তাদের উপার্জন আরও বেশি করে দেশে পাঠাতে সক্ষম হোক।”
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে অংশীদারিত্বে অভিবাসন খরচ কমাতে একটি কার্যকর মডেল কাঠামো তৈরি করতে চাই।” সিঙ্গাপুর এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে আগ্রহী বলে হাইকমিশনার জানান।
এ বৈঠকে আরও আলোচিত হয় পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা। সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ডিরেক্টর ফ্রান্সিস চং জানান, বাংলাদেশ ২০২১ সালে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব করেছিল, যা নিয়ে দু’দেশ সম্ভাব্যতা যাচাইও সম্পন্ন করেছে। চূড়ান্ত চুক্তির বিষয়ে শীঘ্রই আলোচনা শুরু করার আশা রয়েছে।
সিঙ্গাপুরের পক্ষ থেকে পানি শোধন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। এ ছাড়া খাদ্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস তার সরকারের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে বলেন, “আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এবং সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই।” পাশাপাশি তিনি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য সিঙ্গাপুরের সমর্থন চান, যাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করা যায়।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় সিঙ্গাপুরের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মাইকেল লি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: