ব্যাটিং বিপর্যয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো পাকিস্তান
ক্রীড়া ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:০১; আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:০৬
ওয়ানডে সিরিজে সাফল্যের পর পাকিস্তান দলের আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও একই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার প্রত্যাশা ছিল বাবর আজমের দলের। তবে সেই আশা ছাই হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়ানোর পর, হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে তৃতীয় ম্যাচেও ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে তারা।
পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সালমান আগা টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। নিয়মিত অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে এই ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়। ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল আশাব্যঞ্জক। সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম ২৮ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তার ইনিংসে ছিল চারটি চমৎকার চার।
কিন্তু বাবরের বিদায়ের পর পুরো ইনিংসটাই ভেঙে পড়ে। দলের অন্য ব্যাটাররা কেউই লড়াইয়ের মানসিকতা দেখাতে পারেননি। ১১ জন ব্যাটারের মধ্যে বাবর বাদে মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের রানে পৌঁছান। ১৮.১ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ১১৭ রান।
অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন। পেসার অ্যারন হার্ডি তার স্পেলের ৩ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন। লেগ-স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা এবং তরুণ পেসার স্পেনসার জনসন নেন দুটি করে উইকেট। পুরো পাকিস্তানি ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন তারা।
১১৮ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ৩০ রানে দুই উইকেট হারায় তারা। শাহিন আফ্রিদি এবং জাহানদাদ খান ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও অজি ব্যাটার মার্কাস স্টয়নিসের কাছে পাত্তা পাননি।
স্টয়নিসের ২৭ বলে অপরাজিত ৬১ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের ওপর ভর করে ১৩.৫ ওভারেই জয় নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। তার ইনিংসে ছিল পাঁচটি করে চার ও ছক্কা। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে শাহিন আফ্রিদি, জাহানদাদ খান এবং আব্বাস আফ্রিদি একটি করে উইকেট নেন।
পুরো সিরিজ জুড়েই পাকিস্তানের ব্যাটিং ছিল হতাশাজনক। দলটি প্রথম ম্যাচে ১৩৪ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ১২১ রান করেছিল। তৃতীয় ম্যাচে তাদের ব্যাটিং আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মিডল-অর্ডার ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিক ব্যর্থতা এবং লোয়ার অর্ডারের অভিজ্ঞতার অভাবই মূলত দলের পরাজয়ের কারণ।
পাকিস্তানের সামনে এখন ঘরের মাঠে আসন্ন সিরিজগুলোতে নিজেদের ভুল-ত্রুটি কাটিয়ে উঠার চ্যালেঞ্জ। ব্যাটিং ইউনিটের ঘাটতি পূরণ না হলে, ভবিষ্যতে বড় টুর্নামেন্টগুলোতে দলটি আরও বিপাকে পড়তে পারে। কোচিং স্টাফ এবং নির্বাচক কমিটির জন্য এটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, কীভাবে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে আরও কার্যকর করা যায়।
এ পরাজয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটের সাম্প্রতিক সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে বড় এক ধাক্কা খেতে হলো। এখন দেখার বিষয়, তারা ঘরের মাঠের সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: