আবারো হতাশ করলো বাংলাদেশ, মালদ্বিপের বিপক্ষে ১-০ গোলের পরাজয়
এম. এ রনী | প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ০০:২০; আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৫:২০
বাংলাদেশের মাটিতে ৪৫ বছরের জয় খরা কাটিয়ে ইতিহাস রচনা মালদ্বীপের, কাবরেরার জন্য 'কষ্টদায়ক' ফল। দর্শকদের মনজয় করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ দল। কিংস এ্যারেনা বাংলাদেশের ফুটবলকে সমর্থন জোগাতে দর্শকদের ছিল নানা আয়োজন কিন্তু খেলোয়ার দর্শকদের মন জয় করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মালদ্বীপ ১-০ গোলে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ৪৫ বছরের জয় খরা কাটালো। মালদ্বীপের কাছে এই জয়টি যেমন ঐতিহাসিক, তেমনি বাংলাদেশের জন্য ছিল এক হতাশাজনক রাত। কোচ হাভিয়ের কাবরেরার জন্য, এই ম্যাচের ফলাফল ছিল কষ্টদায়ক, কারণ তার দলের খেলার মধ্যে কোনো পরিকল্পনাও স্পষ্ট ছিল না, এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছুটা সমন্বয়হীনতাও দেখা গেছে।
মালদ্বীপের কোচ আলি সুজেইন ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললেন, “এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক জয়। ৪৫ বছর পর আমরা বাংলাদেশের মাঠে জয়ী হলাম। এই জয় আমাদের ফুটবলের জন্য বড় একটি মাইলফলক।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে অতীতে অনেক ফারাক ছিল, কিন্তু গত ৩-৪ বছরে আমরা প্রায় সমপর্যায়ে চলে এসেছি, এবং আজকের জয় তারই প্রমাণ।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা ম্যাচের পর একরকম হতাশা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন। তিনি বলেন, “এই হার সত্যিই কষ্টদায়ক। আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি, তবে সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। দলের পারফরম্যান্সে কিছু ইতিবাচক দিক ছিল, তবে ফলাফলটা দুঃখজনক।” কাবরেরা নিশ্চিত ছিলেন যে তার দল এই ম্যাচে অনেক ভালো খেলেছে, তবে গোলের অভাবেই সব কিছু ভেস্তে গেছে। “আমরা খেলেছি, আক্রমণ করেছি, কিন্তু গোল করতে পারিনি,” যোগ করেন তিনি।
তবে, ম্যাচের ফলাফলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ দলের রক্ষণের ভুল। বিশেষ করে, ১৯ মিনিটে মালদ্বীপের একমাত্র গোলটি আসে বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগের একটি বড় ভুলের কারণে। স্পট কিকের সময়, বাংলাদেশ অধিনায়ক তপু বর্মণ তার রক্ষকদের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় করতে ব্যর্থ হন এবং অফসাইড ট্রাপের পরিকল্পনায় ভুল করেন। এর ফলস্বরূপ, মালদ্বীপের ফাসির সহজেই গোলটি করেন। এই মুহূর্তটি বাংলাদেশ দলের জন্য বড় একটি থাবা ছিল, যেটি ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়।
বাংলাদেশ দলের খেলায় পরিকল্পনার অভাব এবং রক্ষণে সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে, যা ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। যদিও আক্রমণাত্মক খেলা ও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা গোলমুখে পরিণত হয়নি। কাবরেরা তার দলের পারফরম্যান্সে কিছু ইতিবাচক দিক দেখতে পেলেও, দলের এই ভুলগুলো যেন তার সামনে বড় এক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরাজয় বাংলাদেশের এশিয়ান কাপের প্রস্তুতি এবং র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতির লক্ষ্যে বড় এক ধাক্কা। তবে কাবরেরা বলেছেন, তিনি হতাশ হলেও ইতিবাচক দিকগুলো থেকে শেখার চেষ্টা করবেন এবং দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচের জন্য নতুন করে প্রস্তুতি নেবেন।
মালদ্বীপের জন্য এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক জয়, যেখানে তাদের ফুটবল দলের সক্ষমতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশের জন্য, বিশেষত কাবরেরার জন্য, এই ম্যাচ ছিল শিখতে শেখার মুহূর্ত, যেখানে ভুলগুলো শুধরে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। পরবর্তী ম্যাচে বাংলাদেশ যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: