দূর্বল মঙ্গোলিয়াকেও হারাতে পারলো না বাংলাদেশ
ক্রীড়া ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২২ ০০:০৯; আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ০২:১৫

অনেকদিন পর দর্শকে পরিপূর্ণ ম্যাচ ছিল কিন্তু হতাশা নিয়ে আবারো ফিরতে হলো ফুটবলপ্রেমীদের। একের পর আক্রমন যেন মুছরে পড়ছিল মঙ্গোলিয়ার রক্ষনে। বাজে ফিনিশিং আর পরিকল্পনার অভাবে দূর্বল মঙ্গোলিয়ার কাছেও জয় বঞ্চিত বাংলাদেশ ফুটবল দল।
ইব্রাহিম, সোহেল রানা, সুমন রেজাদের একাধিক গোল মিছের মহরা চলল এই ম্যাচে। খেলাতে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও বাংলাদেশ গোলের দেখা পায়নি।
আজ ২৯মার্চ, বিকাল সাড়ে পাঁচটায় সিলেটের জেলা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ফিফা ট্রায়ার-১ ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া। খেলার প্রথম থেকেই বাংলাদেশ মঙ্গোলিয়াকে চেপে ধরেছিল। কিন্তু সঠিক ফিনিশিং এর অভাবে গোল বঞ্চিত থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
খেলার প্রথম মিনিটেই রাকিব একক প্রচেষ্টায় মঙ্গোলিয়ার ডি-বক্সের ভিতরে বাড়িয়ে দেওয়া বলে গোল করতে ব্যর্থ হয় বক্সের ভিতরে থাকা সোহেল ও সুমন রেজা। পরের মিনিটে আবারও রাকিবের প্রচেষ্টা এবারও গোল করার মতো কোন ষ্টাইকারই ছিল না বাংলােদেশের।
খেলার যত গড়াতে থাকে ততই যেন বাংলাদেশের ফুটবল দর্শকদের হতাশা আরও বাড়তে থাকে। একের পর গোল মিছের মহড়া দিতে থাকে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। এই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের গোলকরার ক্ষমতা আদৌও আছে কি?
সম্পূর্ণ ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করেও খেললে শেষ পর্যন্ত গোল বিহিন ম্যাচিই উপহার দিয়েছে দু-দলই। ম্যাচে মঙ্গোলিয়া রক্ষনাত্কক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ কে রুখে দিলো।
বাংলাদেশের এই গোল খরা আজ প্রথম নয়, দীর্ঘদিন ধরেই একের পর ম্যাচে থাকছে গোলবিহীন। বারবারই যেন মনে হচ্ছিল এলিটা কিংসলে মতো কেউ যদি থাকতো হয়তো বা এই ম্যাচে গোল হতেও হতে পারতো।
আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে প্রতিপক্ষ মঙ্গোলিয়ার সাথে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ। গোটা ম্যাচ জুড়ে আক্রমণের পসরা বসিয়েও গোল করতে পারেননি বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা।
প্রথমার্ধে সুমন রেজার দুইবার সুযোগ নষ্টের পর দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ পরিবর্তন করেও গোল নামক সোনার হরিণের খোঁজ পায়নি বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে জমাট বাঁধা রক্ষণে বাংলাদেশকে আটকে দেয় মঙ্গোলিয়া। নিজেরা আক্রমণে তেমন না গেলেও বাংলাদেশের মুহুর্মুহু আক্রমণ ঠেকিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন মঙ্গোলিয়ার ডিফেন্ডাররা।
শুরুর ৪৫ মিনিটে আধিপত্য বিস্তার করে বাংলাদেশ। প্রথম মিনিটেই আক্রমণে উঠে দারুণ সুযোগ তৈরি করে। মাঝ মাঠ থেকে ইব্রাহিমের বাড়ানো পাস ধরে বক্সে ঢুকে গোল মুখে রাকিবের নেওয়া পাস সুমনের পায়ে যাওয়ার আগেই মঙ্গোলিয়া গোলরক্ষক দক্ষতার সাথে ফিরিয়ে দেন। পঞ্চম মিনিটে আবারও আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। বাম দিক থেকে রাকিবের পাস আবারও মঙ্গোলিয়া গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেন।
সময় যত বেড়েছে বাংলাদেশের আক্রমণের পরিমাণ তত বেড়েছে। ১৫ মিনিটে মঙ্গোলিয়ার দুই-তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ইয়াসিন আরাফাতের ডিফেন্স চেরা পাস বক্সের ভেতর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি ইব্রাহিম। ফলে নষ্ট হয় আক্রমণ। ৪১ মিনিটে সোহেল রানার হাওয়ায় ভাসানো পাসে বক্সের ওপর থেকে সুমন রেজার শট ক্রস বারে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে।
প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার আগে ম্যাচের সেরা সুযোগ নষ্ট করেন সুমন রেজা। জামালের ফ্রি কিকে দূরের পোস্টে ইয়াসিন আরাফাত হেড করে গোল মুখে বাড়িয়ে দিলে বুক দিয়ে নামিয়ে বাঁ পায়ের শট নেন সুমন রেজা। কিন্তু তা ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। এই সুযোগ নষ্টের কারণে আফসোসে পুড়তেই পারেন সুমন। প্রথমার্ধে একবারের জন্যও বাংলাদেশের পোস্টে শট নিতে পারেনি মঙ্গোলিয়া।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মঙ্গোলিয়া দুইবার বাংলাদেশের রক্ষণে বল চাপালেও বিপদ ডেকে আনতে পারেনি। বাকি সময়টা বেশ কয়েকবার আক্রমণ করেও মঙ্গোলিয়ার রক্ষণ ভাঙতে পারেনি কাবরেরার দল। নাবীব নেওয়াজ জীবন, জাফর ইকবাল, রায়হান হাসানরা মাঠে নেমেও পাননি গোল।
৭২ মিনিটে ডান দিক থেকে রিমনের ক্রস মঙ্গোলিয়ার এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিক বদলে জামালের পা ছুঁয়ে পোস্টের দিকে যাওয়া বল কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মঙ্গোলিয়া গোলরক্ষক মুঙ্ক এরদেনে। বাকি সময়ে আর মঙ্গোলিয়ার রক্ষণ ভাঙতে না পারায় হতাশার ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: