গত রাতে ম্যাস্তেলা স্টেডিয়ামে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে জয় নিয়ে লালিগা শিরোপা জয়ের আশা জাগিয়ে রাখলো বার্সেলোনা। প্রাণহীন আর গোলহীন প্রথমার্ধ। লিগে ভালেন্সিয়ার মাঠে আগের তিন ম্যাচে কোনো জয় ছিল না কাতালান ক্লাবটির; হেরেছিল একটি, দুটি ড্র। সব মিলিয়ে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে আগের ছয় ম্যাচে মাত্র একটিতে জিতেছিল বার্সেলোনা।
খেলার শুরুতে কঠিন চ্যালেঞ্জে বার্সেলোনার শুরুটা হতো পারতো দারুণ। কিন্তু ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের ছোট পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন তরুণ মিডফিল্ডার পেদ্রি। ১০ মিনিট পর মেসির দারুণ ফ্রি কিকে ফ্লিক করেন রোনালদ আরাহো, বল যায় গোলরক্ষক বরাবর। এছাড়া আরও কয়েকটি সুযোগ নৎসাত করে দেয় বার্সারই সাবেক গোলরক্ষক সিলেসেন। আক্রমন আর পাল্টা আক্রমনে গোলশুন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মধ্যে বার্সার শিবিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে আর্সেনালের সাবেক ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল পাওলিস্তা বার্সার ডিফেন্ডারদের ভুলে হেড করে গোল করে স্বাগতিকদের লিড এনে দেয়। ভালেন্সিয়ার মাঠে নামলেই কী যেন হয় বার্সেলোনার। বিপদে পড়তে বসেছিল এবারও। রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে দলকে পথ দেখালেন লিওনেল মেসি। দারুণ জয়ে শিরোপা লড়াইয়ে ভালোমতোই টিকে রইলো রোনাল্ড কুমানের দল।
সাত মিনিট পর এক ঘটনাবহুল গোলে সমতা টানেন মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ মিনিটের মধ্যে পিছিয়ে পড়া বার্সালোনা ম্যাচে সমতা আনার জন্য জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকা বার্সাকে সুযোগটি করে দেয় ভ্যালেন্সিয়ার ডিফেন্ডাররা। ভালেন্সিয়ার ডি-বক্সে ডিফেন্ডার তনি লাতো ইচ্ছাকৃতভাবে হাত দিয়ে মেসির ক্রস ঠেকানোয় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। বার্সেলোনা অধিনায়কের দুর্বল স্পট কিক অবশ্য ঠেকিয়ে দেন ইয়াসপের সিলেসেন। আলগা বল পেয়ে পেদ্রির নেওয়া শট গোললাইনে প্রতিহত হয়। এরপরও বল ক্লিয়ার হয়নি, ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শটে স্কোরলাইন ১-১ করেন মেসি।
সমতা ফেরার কিছু সময় পরেই ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। জর্দি আলবার ক্রসে ডি ইয়ংয়ের হেড রুখে দেন ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক সিলেসেন; কিন্তু বিপদমুক্ত করতে পারেননি সাবেক বার্সেলোনা গোলরক্ষক। ছুটে গিয়ে বিনা বাধায় লক্ষ্যভেদ করেন ফরাসি স্টার গ্রিজমান।
মেসি তার বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারে চোখ ধাঁধানো সব ফ্রি কিকে অনেকবার প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেছেন মেসি। ৬৯তম মিনিটে দেখা মেলে আরেকটির। প্রায় ২০ গজ দূর থেকে তার বাঁকানো শটে বল কাছের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে গোলবার অতিক্রম করে। আর বার্সা পেয়ে যায় ৩-১ গোলের লিড।
ম্যাচের বাকি সময়টুকু বার্সার চাপ ধরে রাখে। এরমধ্যেই ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ডিবক্সের বাহির থেকে প্রায় ৩৫গজ দুর থেকে বুলেট গতির এক শটে গোল করে সলের ভ্যালেন্সিয়া ব্যবধান ৩-২ নিয়ে আসেন। এই গোলে নাটকীয় শেষের সম্ভাবনা জাগলেও বাকি সময়ে তেমন কিছু করতে পারেনি ভালেন্সিয়া। ম্যাচের বাকি সময় আর কোন গোল না হওয়ায় বার্সা ৩-২ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ম্যাচ শেষের বাঁশিতে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বার্সেলোনা।
এবারের লিগে এই পর্যন্ত মেসি ২৮ গোল করে শীর্ষ স্থানে, ৭ গোল কম করে ২১ গোল নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রিয়েল মাদ্রিদের করিম বেনজেমা।